আবর্তন কাকে বলে ? আবর্তনের নিয়ম গুলি লেখ | উচ্চ মাধ্যমিক দর্শন সাজেশন | HS Philosophy Suggestion 2025
আবর্তন কাকে বলে ? আবর্তনের নিয়মগুলি উদাহরণ সহ উল্লেখ কর ?
অথবা,
আবর্তন কাকে বলে ? আবর্তনের নিয়ম গুলি লেখ
অথবা,
A,E,I,O ------ বচনের আবর্তন উদাহরণসহ ব্যাখ্যা কর ?
অথবা,
বৈধ আবর্তনের নিয়মগুলি উদাহরণসহ ব্যাখ্যা কর ?
আবর্তন:-
আবর্তনের নিয়ম:-
আবর্তনের সময় নিম্নের নিয়মগুলি অবশ্যই পালন করতে হবে -
(১) আশ্রয় বাক্যের উদ্দেশ্য পদ সিদ্ধান্তের বিধেয়পদ হবে।
(২) আশ্রয় বাক্যের বিধেয়পদ সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য পদ হবে।
(৩) আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের গুণ অভিন্ন হবে । অর্থাৎ আশ্রয় বাক্য যদি সদর্থক হয় তাহলে সিদ্ধান্ত সদার্থক হবে । এবং আশ্রয় বাক্য নঞার্থক হলে সিদ্ধান্তের ও নঞার্থক হবে ।
(৪) যে পদ আশ্রয়বাক্য ব্যাপ্য নয় । সে পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না । এই নিয়মটিকে বলা হয় ব্যাপ্যতার নিয়ম ।
আবর্তনের নিয়মগুলি উদাহরণসহ ব্যাখ্যা:-
আবর্তনের নিয়মগুলিকে অনুসরণ করে A,E,I এবং O চার প্রকার বচনকে আবর্তিত করা যাক ।
A, বচনের আবর্তন:-
আবর্তনীয়:- সকল মানুষ হয় মরণশীল জীব -- A
আবর্তিত:- কোনো কোনো মরণশীল জীব হয়
মানুষ-- I
এখানে আবর্তনের প্রথম ও দ্বিতীয় নিয়ম অনুসারে আশ্রয় বাক্যের উদ্দেশ্য 'মানুষ' পদটি সিদ্ধান্তে বিধেয় এবং আশ্রয়বাক্যের বিধেয় (মরণশীল জীব) পদটি সিদ্ধান্তে উদ্দেশ্য হয়েছে । তৃতীয় নিয়ম অনুসারে গুণের কোন পরিবর্তন করা হয়নি । এখানে A বচন থেকে সিদ্ধান্তে 'I' বচন হয়েছে । সুতরাং উভয়ই সদার্থক অবশ্য সিদ্ধান্ত i বচন না হয়ে A বচন হলে গুণের কোন পরিবর্তন হয় না । চতুর্থ নিয়মটিকে পরিবর্তন হতো না । এবং সে ক্ষেত্রে চতুর্থ নিয়মটি কে পরিবর্তন হতো না । কিন্তু সেক্ষেত্রে চতুর্থ নিয়্ম্টিকে লংঘন করা হতো । যেমন ------
সকল মানুষ হয় মরণশীল জীব ---- A
সকল মরণশীল জীব হয় মানুষ ---- A
এক্ষেত্রে 'মারণশীলজীব' পদটি আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য না হয়ে সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হয়েছে । কারন A বচনে কেবলমাত্র উদ্দেশ্য ব্যাপ্য হয় । ফলে যে পদ আশ্রয় বাক্য ব্যাপ্য হয়নি তা সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হয়ে যাচ্ছে । তার ফলে আবর্তনের চতুর্থ নিয়ম লঙ্ঘন করা হচ্ছে । কিন্তু সিদ্ধান্ত যদি 'I' হয় তাহলে চতুর্থ নিয়মটি পালন করা হয় কারণ 'I' বচনের কোন ব্যাপ্য নয় । সুতরাং A বচনের আবর্তন 'I' বচন হবে ।
E, বচনের আবর্তন:-
আবর্তনীয়:- কোনো মানুষ নয় দেবতা -- E
আবর্তিত:- কোন দেবতা নয় মানুষ --- E
এখানে আবর্তনের প্রথম ও দ্বিতীয় নিয়ম অনুসারে আশ্রয় বাক্যের উদ্দেশ্য 'মানুষ' পদটি সিদ্ধান্তে বিধেয় এবং আশ্রয়বাক্যের বিধেয় (দেবতা) পদটি সিদ্ধান্তে উদ্দেশ্য হয়েছে । তৃতীয় নিয়ম অনুসারে গুণের কোন পরিবর্তন করা হয়নি । কারণ এখানে আশ্রয় বাক্য ও সিদ্ধান্ত উভয়ই নঞার্থক বচন । অবশ্য সিদ্ধান্ত E বচন না হয়ে O বচন হলে গুণের কোন পরিবর্তন হতো না এখানে আবর্তনের চতুর্থ নিয়মটিকে অনুসরণ করা হয়েছে । সুতরাং E বচনের আবর্তন E হবে ।
I , বচনের আবর্তন:-
আবর্তনীয়:- কোনো কোনো মানুষ হয়
শিক্ষক ----- I
আবর্তিত:- কোনো কোনো শিক্ষক হয়
মানুষ ------ I
এখানে প্রথম ও দ্বিতীয় নিয়ম অনুসারে উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের স্থানকে ন্যায় সঙ্গতভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে । তৃতীয় নিয়ম অনুসারে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্ত উভয়ই সদর্থক বচন । চতুর্থ নিয়মটি কে করা হয়েছে, কারণ আশ্রয়বাক্য সিদ্ধান্ত উভয়ই 'I' বচন হওয়াতে কোন পদ ব্যাপ্য হয় নি । সুতরাং 'I' বচনের আবর্তন 'I' হবে ।
O, বচনের আবর্তন:-
'O' বচনকে আবর্তন করা যায় না । 'O' বচনকে কেন আবর্তিত করা যায় না, তা পরীক্ষা করে দেখা যাক । যেহেতু 'O' বচন নাঙ্গর্থক বচন সেহেতু আবর্তনের নিয়ম অনুযায়ী 'O' বচনকে আবর্তন করা হলে হয় 'O' বা 'E' হবে আমরা যদি ও বচনকে আবর্তন করে উপায় তাহলে দেখা যাবে -----
আবর্তনীয়:- কোনো কোনো মানুষ হয়
শিক্ষক ----- O
আবর্তিত:- কোনো কোনো শিক্ষক নয়
মানুষ ----- O
কারণ এখানে এই নিয়মটি অবৈধ । কারণ এইখানেই যুক্তি সঙ্গতভাবে 'O' বচনকে আবর্তিত করা হয়নি । এক্ষেত্রে আবর্তনের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় নিয়ম কে যথার্থ ভাবে অনুসরণ করা হয়েছে । কিন্তু আবর্তনের চতুর্থ নিয়ম টিকে অনুসরণ করা হয় নি কাজেই 'O' বচনের আবর্তন 'O' বচন হবে না । একইভাবে যদি 'O' বচনকে আবর্তন করে 'E' পাই তাহলে একই নিয়ম লঙ্ঘন হবে । সুতরাং 'O' বচনের বৈধ আবর্তন সম্ভব নয়।