রাজ্যপালের ক্ষমতা, কার্যাবলী ও পদমর্যাদা আলোচনা করো | HS Political Science Suggestion 2025

প্রশ্ন: রাজ্যপালের ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করো।
বা, রাজ্যপালের ক্ষমতা ও কার্যাবলী
বা, ভারতের রাজ্যপালের ক্ষমতা ও কার্যাবলী pdf
বা, ভারতের অঙ্গরাজ্যের রাজ্যপালের ক্ষমতা ও পদমর্যাদা ব্যাখ্যা করো।
বা, রাজ্যপালের ক্ষমতা ও পদমর্যাদা আলোচনা করো।
বা, ভারতের যেকোনো অঙ্গরাজ্যের রাজ্যপালের শাসক ও আইন সক্রান্ত ক্ষমতা ও কাজগুলি আলোচনা কর।

রাজ্যপালের ক্ষমতা, কার্যাবলী ও পদমর্যাদা আলোচনা করো | HS Political Science Suggestion 2023
রাজ্যপালের ক্ষমতা, কার্যাবলী ও পদমর্যাদা আলোচনা করো

উচ্চ মাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান সাজেশন ২০২৫


অঙ্গরাজ্যের শাসন বিভাগ রাজ্যপাল ও রাজ্যমন্ত্রী সভাকে নিয়ে গঠিত হয়। রাজ্যপাল হলেন রাজ্যের শাসন বিভাগীয় প্রধান। তার নামেই রাজ্য সরকারের যাবতীয় কার্য পরিচালিত হয়। কেন্দ্রের রাষ্ট্রপতি ন্যায় রাজ্যে রাজ্যপাল ও নিয়মতান্ত্রিক শাসক প্রধান। অঙ্গরাজ্যের রাজ্যপালরা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ৫ বছরের জন্য মনোনীত হন।


রাজ্যপালের ক্ষমতা ও কার্যাবলী:

রাজ্যপালের ক্ষমতা ও কার্যাবলীকে নিম্নলিখিত পাঁচ ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা যেতে পারে।


(1) শাসন সংক্রান্ত ক্ষমতা: রাজ্যপালের শাসন সংক্রান্ত ক্ষমতার মধ্যে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হলো ------

(১) রাজ্যের শাসন সংক্রান্ত যাবতীয় ক্ষমতা তত্বগতভাবে রাজ্যপালের হাতে ন‍্যাস্ত থাকে। তিনি নিজে অথবা তার অধ্যাস্তা কর্মচারীদের মাধ্যমে সেসব ক্ষমতা প্রয়োগ করেন।

(২) রাজ্যের শাসন কার্য যাতে যথাযথ ভাবে সম্পাদিত হতে পারে সেজন্য তিনি নিয়মাবলী প্রণয়ন করতে পারেন।

(৩) রাজ্যপাল বিধানসভার সংখ্যা ঘনিষ্ঠ দল বা মোচার নেতা বা নেত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ও তাঁর পরামর্শক্রমে রাজ্য মন্ত্রীসভার অন্য সদস্যদের নিয়োগ করেন।

(৪) তিনি মুখ্যমন্ত্রী সহ যে কোন মন্ত্রীকে পদচ্যুত করতে পারেন।

(৫) রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল, রাজ্য জনপালান কর্তৃ্ক কমিশন এর সদেস্য প্রমুখ উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারীদের তিনি নিয়োগ করেন।

(৬) রাজ্যে শাসনতান্ত্রিক অচল অবস্থা দেখা দিয়েছে বলে মনে করলে রাজ্যপাল 356 ধারা জারি করার জন্য রাষ্ট্রপতি কাছে সুপারিশ করতে পারেন।

(৭) নিজ নিজ রাজ্য অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির (কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া) আচার্য বা চ্যানশেলার হিসাবে রাজ্যপালেরা কার্যসম্পাদন করেন।


(2) আইন সংক্রান্ত ক্ষমতা: রাজ্যপালের হাতে আইনসংক্রান্ত যেসব গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতা রয়েছে, সেগুলি হল ------

(১) যেসব রাজ্যের আইনসভা দ্বিকক্ষ  বিশিষ্ট সেই সব রাজ্যে বিধান পরিষদে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের রাজ্যপদ কয়েকজন ব্যক্তিকে মনোনীত করতে পারেন। এছাড়া বিধানসভায় ইঙ্গ-ভারতীয় কোন প্রতিনিধি না থাকলে রাজ্যপাল উক্ত সম্প্রদায় থেকে একজন সদস্যকে বিধানসভায় মনোনীত করতে পারেন।

(২) মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে রাজ্যপাল রাজ্য আইনসভার অধিবেশন আহ্বান করতেন কিংবা স্থগিত করতে পারেন তাছাড়া প্রয়োজন মনে করলে বিধানসভা ভেঙ্গে দিতে পারেন।

(৩) রাজ্য আইনসভার গৃহীত কোন বিল রাজ্যপালের সম্মতি ছাড়া আইনের পরিণত হতে পারে না।

(৪) তিনি বিধানসভা কিংবা বিধান মণ্ডলীর কাছে বাণী প্রেরণ করতে পারেন।

(৫) অর্থবিল ছাড়া অন্যান্য বিল কে তিনি রাজ্য আইনসভা পূর্ণ বিবেচনের জন্য ফেরত পাঠাতে পারেন।

(৬) রাজ্য আইনসভার অধিবেশন বন্ধ থাকাকালীন জরুরী প্রয়োজনে রাজ্যপাল অধ্যাদেশ বা ordinennce জারি করতে পারেন।


(3) অর্থ সংক্রান্ত ক্ষমতা: রাজ্যপালের অর্থ সংক্রান্ত ক্ষমতা গুলি হল -----

(১) রাজ্যপালের সম্পত্তি ছাড়া রাজ্য আইনসভা কোন ব‍্যায় বরাদ্দের দাবি পেশ কিংবা কোন অর্থবিল উত্থাপন করা যায় না।

(২) রাজ্যের বাজেট বার্ষিক আয় ব্যয়ের বিবরণ তিনি অর্থমন্ত্রী মারফত আইনসভার কাছে উত্থাপন করেন।

(৩) রাজ্যপালের হাতে রাজ্যের আকস্মিক ব‍্যায় তহবিল এর দায়িত্ব ন‍্যাস্ত থাকে।


(4) বিচার সংক্রান্ত ক্ষমতা: রাজ্যপালের হাতে বিচার সংক্রান্ত ক্ষমতা রয়েছে, এগুলি হল ------

(১) রাজ্যপালের পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি রাজ্যের হাইকোর্ট বিচারপতিদের নিয়োগ করেন।

(২) রাজ্যের দেওয়ানী আদালতের বিচারপতি, অতিরিক্ত জেলা জজ, দায়েরা জজ প্রমুখকে রাজ্যপাল নিয়োগ করতে পারে।

(৩) আইন ভঙ্গের অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীর দন্ডাদেশ রাশ/ হ্রাস করা, স্থগিত রাখা, এমনকি তাকে ক্ষমা প্রদর্শন করার ক্ষমতা রাজ্যপালের রয়েছে। তবে মৃত্যুদণ্ডগা প্রাপ্ত ব্যক্তিকে ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা তার নেই।


(5) স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা: উপরোক্ত চার ধরনের ক্ষমতা ছাড়াও সংবিধান রাজ্যপালের হাতে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা  প্রদান করেছে। সংবিধানের যেসব ক্ষেত্রে রাজ্যপাল কে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগের স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ------

(১) পার্শ্ববর্তী কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে তা স্বাধীনভাবে পালন করা।
 
(২) মনিপুর ও সিকিমের রাজ্যপালের ক্ষেত্রে পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য বিশেষ দায়িত্ব পালন করা।

(৩) নাগাল্যান্ডের রাজ্যপালের ক্ষেত্রে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বিশেষ দায়িত্ব পালন করা।

(৪) রাষ্ট্রপতির কাছে সাংবিধানিক অচল অবস্থা সম্পর্কিত রিপোর্ট পাঠানো।

(৫) রাজ্য আইন সবার যে কোন বিল রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য পাঠানো।

(৬) রাজ্য মন্ত্রিসভা বরখাস্ত করা বা রাজ্য বিধানসভা ভেঙে দেওয়া ইত্যাদি।



রাজ্যপালের পদমর্যাদা:


রাজ্যপাল যেহেতু রাষ্ট্রপতির মতো নিয়ম তান্ত্রিক শাসক, তাই তার পদটিকে নেহাতই  নাম সর্বস্ব পদ বলে অনেক অভিমত প্রকাশ করেন। অন্যদিকে সংবিধানের কিছু ব্যবস্থার জন্য তাকে পুরোপুরি নিয়ম তান্ত্রিক শাসক বলা চলে না তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা পুরো করে থাকেন যা তাকে শক্তিশালী প্রাসাশকের ভূমিকায় অধিষ্ঠিত করেছে। এইজন্য সংবিধান বিশেষজ্ঞরা তাকে প্রকৃত শাসক কর্তা বলে অভিহিত করেন। তবে এটা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, তিনি নিছক নিয়ম তান্ত্রিক শাসক নন। রাজ্যপালের দৈত্য ভূমিকা আছে। একদিকে তিনি রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ শাসক প্রধান আবার অন্যদিকে তিনি কেন্দ্রের প্রতিনিধি হিসেবে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতার অধিকারী। অবশ্য বিশেষ কয়েকটি ঘটনা বাদ দিলে ভারতের সংবিধানের ইতিহাস বিগত দশক গুলিতে রাজ্যপালের সাধারণভাবে নিয়মতান্ত্রিক শাসক প্রধানের ভূমিকায় পালন করে চলেছে এটা বলা যায়।



আরও পড়ুন:

প্রশ্ন: ভারতের লোকসভার স্পিকারের কার্যাবলী আলোচনা করো।
উত্তর: Click here 

প্রশ্ন: রাজ্য আইনসভার গঠন ও কার্যাবলী আলোচনা করো। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার গঠন ও কার্যাবলী লেখ।
উত্তর: Click here 

প্রশ্ন: আইনসভার কার্যাবলী ও ভূমিকা ব্যাখ্যা করো ? 
উত্তর: Click here 

প্রশ্ন: সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ বা রাষ্ট্রসংঘ অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর - উচ্চ মাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান সাজেশন
উত্তর: Click here 



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url